blogger widgets

Tuesday 18 March 2014

প্রথম প্রণয়

মুহিবুল হাসান খোকন। বছর বাইশের এক তাগড়া যুবক। ইদানিং বাসায় ফিরেই কম্পিউটারে বসা তার একটা নেশার মত হয়ে গেছে। কি এক অজানা আকর্ষণ তাকে চুম্বকের মত টানে। খোকনের গ্রামের বাড়ি যশোরের মনিরামপুরে। কপোতাক্ষ নদের তীরে খেলা করে কেটেছে বাল্যকাল। কৈশোরের দিন গুলো তার জন্য খুব সুখময় ছিলো না। বাবা মাকে হারিয়ে জীবনের কঠিন পাশটা সে হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছে কাঁচা বয়সেই। আবেগ টাবেগকে সে প্রথম দিকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি কখনো। যৌবনের শুরুতে জীবিকার তাগিদে সে যশোর থেকে পাড়ি জমায় ইট পাথরে মোড়া এই ঢাকা শহরে। যশোর রেল স্টেশান থেকে শুরু হওয়া জার্নি বাই ট্রেন শেষ হয় কমলাপুরের প্লাটফর্মে। শুরুর দিন গুলো কি কঠিনই না ছিলো। ক্ষুধায় পেট মোচড় দিয়ে ওঠে। পকেটের অবস্থা সংগীন। খাবারের দোকান গুলোতে বাহারি খাবার থরে থরে। সাজিয়ে রাখা। খাবারের ঘ্রাণ বাতাসে চড়ে ধাক্কা খায় নাকের বারান্দায়। আর সেই ধাক্কার রেশ গিয়ে পৌঁছায় মস্তিষ্কে। ক্ষুধাটা তখন চাগিয়ে উঠে। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে সরে যেতে হয়েছে। কত বেলা যে অভুক্ত কেটে যেত তার খোঁজ কেউ রাখে নাই। রাখার সময়ও ছিলো না। রাত যত দীর্ঘই হোক না কেন একটা সময় প্রভাত হয়। খোকনের জীবনেও প্রভাত আসে। অনেক কষ্টের পরে আসে সোনালী সেই ভোর। সে নিজের প্রচেষ্টায় ছোট খাট একটা কোম্পানী দাঁড় করিয়ে ফেলে। মতিঝিলে একটা ফ্লাট কেনার চেষ্টা করে। স্বপ্ন দেখে সোনালী এক সুদিনের। 



২০০৫ সালের কথা। খোকনের জীবনে নতুন কিছু ঘটে যায়। খোকন প্রেমে পড়ে। তাও একটা ছেলের প্রেমে। তার নিষ্ঠুর পৃথিবীতে এক চিলতে সুখের বাতাস বয়ে যায়। এটাকে ঠিক প্রেম বলা যায় কিনা সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে। ছেলেটার সাথে এখনও দেখা হয় নাই। সামাজিক যোগাযোগ সাইট Hi5 এ পরিচয়। হাই ফাইভে খোকনের নাম নিও অরটন। আর সেই ছেলেটার নাম নীল রোহিত। নীল লোহিত হলে নামটা অর্থপূর্ণ হত। প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুনিলের ছদ্মনাম নীল লোহিত। ছেলেটার আসল নাম হয়তো রোহিত। হয়তো বলছি এজন্য যে আজকাল ইন্টারনেটের অধিকাংশ মানুষ ছদ্মনামের আড়ালে নিজেদের লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে। 

রোহিত এবার ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছে। তার বাসা ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে। ছেলেটার কথা বার্তা রহস্যময়। কোন কিছুই খোলসা করত না। হেঁয়ালি ভরা কথা বার্তায় থাকত অন্যরকম এক সরলতা। আর এটাই খোকনের খুব ভালো লাগত। রোহিত সব সময় খোকনের খবর নিত। কি খেয়েছে, কখন খেয়েছে। এত এত প্রশ্নে সে মোটেও বিরক্ত হত না। নিষ্ঠুর পাষাণ এই শহরে সে এক মুঠো ভালবাসা খুঁজে পেয়েছে কম্পিউটারের ভিতর এক অজানা রাজ্যে। আর এটাই মূলত নেশার কারণ। রোহিত খোকনকে বলত তার মতই কাউকে সে এতদিন খুঁজছিলো। এত দিনে সে খুঁজে পেয়েছে মনের মানুষ। খোকনকে সে অনেক অনেক ভালোবাসবে। চিরকাল খোকনের পাশে থাকবে। খোকন সমকামিতার স্বাদ পেয়েছে অনেক আগেই। কোন এক দুর্বল মূহূর্তে পরিচিত কারো দ্বারা। সমকামিতা সম্পর্কে খোকনের ধারণা অন্যরকম ছিলো। দুজন পুরুষ জৈবিক তাড়নায় একে অন্যের সাথে মিলিত হয় এটা সে বোঝে। শুক্রাণু ক্ষরণের পরেই সে তাড়ণা মিলিয়ে যায়। দুজন দুজনের জগতে ফিরে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দুজন পুরুষে ভালোবাসা সম্ভব এটা কিছুতেই তার মাথায় ঢুকতো না। দুজন পুরুষে আবার কিভাবে ভালোবাসা সম্ভব। কিন্তু পাথরে ফুল ফুটিয়েছে রোহিত। খোকন সত্যি ভালবেসে ফেলেছে রোহিতকে। অনেকে প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে। আর সে না দেখা কল্পনার মানুষটির প্রেমে পড়েছে। 

রোহিতের সাথে প্রতিদিন ফোনে কথা হয়। কত কত বিষয় নিয়ে তারা গল্প করে তার ইয়ত্বা নেই। কথায় কথায় রাগ, অভিমান, কথাকাটাকাটি সবই চলতে থাকে। বিছানায় শুয়ে কথা বলে খোকন। তার চোখ থাকে ঘরের সিলিং এর দিকে। কিন্তু সে চোখ কিছুই দেখে না। সে না দেখা রোহিতের মুখকে কল্পণা করে। যে মানুষের কথা এত সুন্দর, এত সাজানো গোছানো সেই মানুষটি কেমন দেখতে! কথায় কথায় সারা রাত কেটে যায়। ভোরের আলো ফোঁটে। ফোনের ব্যালেন্স ফুরিয়ে যায়। এক্সট্রা রিচার্জ কার্ড কিনে রাখে খোকন। রোহিতের সাথে কথা না বলতে পারলে তার কিছুই ভালো লাগে না। বুকের ভেতর আঁকুপাকু করে। মতিঝিল থেকে ক্যান্টনমেন্ট খুব বেশী দূরে নয়। সে একেকদিন বাসে করে চলে যায় ক্যান্টনমেন্টে। রোহিতকে ফোন দেয়। রোহিত আসবে বলে। রাস্তা ধরে পায়চারি করে। শক্ত মনের মানুষ সে। তবু হার্টবিট বেড়ে যায়। হালকা ঘাম ফুঁটে ওঠে কপালে। রোহিতের জন্য অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। তবু রোহিতের দেখা মেলে না। ফোনে ফোন দেয়। রোহিত ফোন রিসিভ করে না। যে ছেলে ফোনে , চ্যাটিং এ ভালোবাসার কথার ফুলঝুরি ছোটায় সে সামনে কেন আসে না এটাই খোকন বুঝতে পারে না। ভগ্ন হৃদয়ে সে নিজের ঘরে ফিরে আসে। খুব বিমর্ষ লাগে। মনে হয় ঘুমে দুচোখ বুজে আসছে। কিন্তু ঘুম আসে না। রোহিতকে সে আবার মেসেজ পাঠায়। রোহিত মেসেজের উত্তর দেয়। আবার কথা শুরু হয়। কথার পিঠে কথা হয়। লাভ চ্যাটে রাত ভোর হয়। 

খোকন আবার ক্যান্টনমেন্টে যায় রোহিতকে এক নজর দেখার আশায়। কিন্তু রোহিত দেখা দেয় না। হয়তো রোহিত তার পাশে দিয়ে হেঁটে গেছে কিন্তু সে চিনতে পারে না। এরকম বেশ কয়েকবার হলো। রোহিত কথা দিয়েও কথা রাখে নাই। খোকন অপেক্ষা করে করে ফিরে এলো। শেষ দিন খোকন দুঃখ কষ্ট সহ্য না করতে পেরে রাগে ক্ষোভে একটা মেসেজ দিলো রোহিতকে, “আমাদের আর কোন দিন দেখা হবে না”। 

তাদের আর কোন দিনই দেখা হয় নাই। রোহিত সেই মেসেজের উত্তর দেয় নাই। খোকনও রোহিতকে আর কোন মেসেজ পাঠায় নাই। অনেক দিন কেটে যায়। রোহিত হারিয়ে গেলো। খোকন জানে এই শহরেই আছে। কিন্তু বের করতে পারে না মানুষটিকে। কিন্তু রোহিতকে দেখার উগ্র বাসনা খোকনের মনে আজো সুপ্ত রয়ে গেছে। হাই ফাইভের চল এখন আর নেই। ফেসবুকের পাতায় পাতায় এখনো সে রোহিতকে খুঁজে ফেরে। রোহিত নামে কোন আইডি দেখলে সে ঢু মারে তার প্রোফাইলে। ছবি দেখে। চেনার চেষ্টা করে। 

২০১৪ সাল। তরতর করে অনেকটা সময় কেটে গেছে। অনেক কিছুই বদলে গেছে। খোকন আর আগের মত উগ্র ভালোবাসার কাঙাল নেই। বিয়ে করে স্থির হয়েছে। যদিও সমকামী জীবনকে সে ছাড়তে পারে না। খোকন এখন দুই সন্তানের জনক। ছেলেরা বড় হচ্ছে। এখন এসব ছাড়া উচিত বলে মনে করে সে। তার সেই ছোট্ট কোম্পানী এখন বেশ বড় হয়েছে। অনেক লোক সেখানে কাজ করে। ইত্তেফাকের মোড় পেরিয়ে কিছু দূরে তার ফ্লাট। পাঁচতলায় দক্ষিন মুখো বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সে এখনো রোহিতের কথা ভাবে। প্রেম! প্রেম সে অনেক গুলোই করেছে। অনেক রোহিত এসেছে তার জীবনে। কিন্তু স্থির হতে পারেনি কারো সাথে। খোকন আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে আছে অনেক দিন হলো। হাজার হাজার মানুষের ভীড়ে তাকে আলাদা করে দেখার মত কিছু পায়নি আমি। প্রথম সে আমার নজরে আসে ২০০৯ সালের দিকে। তখন আমি সেন্ট মার্টিন সি বিচে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত দিনের শিক্ষা সফরে এসেছি। আমি বরাবরই ফেসবুকের পোকা। যেখানেই যাই না কেন ফেসবুক আমার সাথে থাকে। সিবিচে বসে ফেসবুক গুতাই। দেখতে পেলাম খোকন তার বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে হানিমুনে এসেছে। কালার ম্যাচ করা পোশাক পরে তারা অনেক ছবি আপলোড করেছে। একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করছে। পেছনে বঙ্গোপসাগরের নীল ক্যানভাস। আকাশে সাদা সাদা মেঘ। আমি একটার পর একটা ছবি দেখে যাই। কিছুটা আফসোস বোধ করি। ইশ! আমার যদি কেউ থাকত। এভাবে ছবি তোলার সৌভাগ্য কি কখনো হবে আমার! আমি খোকনকে নক করিনি। কিন্তু মাথার ভেতর তার হানিমুনের ছবিগুলো গেথে গেছে। যদিও খোকন খুব বেশী বন্ধু বৎসল নয় তবু একটা সময়ে খোকনের সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্ব তৈরী হয়। রোহিতের গল্প শুনে আমিও রোহিতকে দেখার আগ্রহ বোধ করি। রোহিত কি আমার লেখা এই গল্প পড়বে কোন দিন! 

টিনেজ ছেলেদের প্রতি আক্রোশ বোধ করে সে। কিছুদিন প্রেম করার পরে সে তাদের ছ্যাঁকা দেয়। টিনেজদের ছ্যাঁকা দিয়ে এক অসুস্থ আনন্দের স্বাদ পায় সে। ছ্যাঁকা খেয়ে কিশোর ছেলেগুলো কান্নাকাটি করে, ঘ্যান ঘ্যান করে। চাপা উল্লাসে ফেটে পড়ে তার মন। মাঝে মাঝে নিজেকে তার স্যাডিস্টিক মনে হয়। মনে হয় সে যা করছে সেটা উচিত নয়। তবুও সে নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারে না। এই জগত থেকে বেরিয়ে যেতে চায় । কিন্তু পারে না। রোহিত কে দেখার ইচ্ছে গুমরে মরে। শুধু একবার দেখতে ইচ্ছে করে সেই ছেলেটিকে। নিশ্চয়ই এখন সে অনেক বড় হয়ে গেছে। একবার তাকে জিজ্ঞেস করতে চায়। শুধু একবার। “ভালো যদি নাই বাসবে তবে ভালোবাসা জাগালে কেন ?” 

কত প্রশ্ন যে নিরুত্তর রয়ে যায়। উত্তর দেবার মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। 


[ পাঠক যখন গল্প পড়ে লাইক কমেন্টস করে তখন লেখক অনাবিল আনন্দ উপভোগ করে। আর কেউ করে কিনা জানিনা। কিন্তু আমি করি। অন্যেরা যখন আমার গল্প পড়ে লাইক দিয়ে জানান দেয় যা তারা আমার গল্প পড়েছে, পছন্দ করেছে তখন আমি আনন্দিত হই। তোমার যদি কষ্ট না হয় এবং আমার লেখা লাইক দেয়ার উপযুক্ত মনে করলে অবশ্যই লাইক দেবে বন্ধু। এটা কোন অনুরোধ নয়। আদেশও নয়। এটা তোমাদের কাছে আমার দাবী। ]

Friday 14 March 2014

দ্যা স্ট্রিং

আর্কিটেক্ট মালিক তার বাবার মৃত্যুর খবর শুনে ফ্রান্স থেকে তিউনিসিয়াতে তার মা সার'র সাথে দেখা করতে আসে। স্বামীর মৃত্যুর পর সারা তার নিজের দেখাশোনা এবং একা সময় কাটাতে হাতের কাজ করানোর জন্য বিলাল নামের একটা যুবক আর ওয়াফা নামের একটা মেইড নিজের জন্য এ্যাপোয়েন্ট করে। মালিক এখনো তার মায়ের কাছে তার সবচেয়ে বড় সত্যটি প্রকাশ করতে পারেনি যে সে সমপ্রেমী। প্রথম দেখাতেই সে পেটানো মাংসাসী শরীরের বিলালকে পছন্দ করে ফেলে। আর কোন একভাবে আন্দাজ করে যে বিলালও সমপ্রেমী হতে পারে। তাই সে মালিক আর সার্ভেন্টের ব্যাবধান রেখে তাকে পরখ করতে থাকে বিভিন্নভাবে।

মালিক তিউনিসিয়াতে একটা মসজিদের ডিজাইনের উপর কাজ করছে আর তার কো লেসবিয়ান ওয়ার্কার শিরিন মালিককে তার সন্তানের বাবা হওয়ার জন্য অনুরোধ করে। মুভিটির নাম "দ্যা স্ট্রিং" অনেকগুলো ছোট ছোট সূতোর গিট বন্ধন নিয়ে যার সবগুলো কোন না কোনভাবে মালিকের সাথে জড়িত। তিউনিসিয়ার মুসলিম সমাজে মালিকের পক্ষে খোলামেলা সেক্স করার জন্য পার্টনার পাওয়া মুসকিল হওয়াতে সে জিগলোর সাথে সেক্স করে নিজের যৌবন শান্ত করে আর বিলালকে সাথী হিসেবে পাওয়ার জন্য সম্ভব্য সবকিছু করতে থাকে এবং একটা সময়ে পেয়েও যায়। সারা মালিক আর বিলালকে একসাথে দেখে ফেললে মালিক তার মায়ের কাছে সব কিছু স্বীকার করে। স্বামীর পর ছেলেই তার সব তাই ছেলের খুশীর জন্য সারা বিলালকে মালিকের পার্টনার হিসেবে মেনে নেয় এবং শিরিনের সন্তানকে বাবার পরিচয় দিয়ে মালিক, শিরিন, বিলাল, সারা সবাই একসাথে একটা সুখের জীবন উপভোগ করতে থাকে। একটা সময় মুভি দেখতে দেখতে মনে হবে, মুভির নামের সাথে মুভির কাহিনীর কোন মিল নেই কিন্তু ধীরে ধীরে কাহিনী গড়াতে থাকলে বোঝা যায় নামের সাথে পুরোপুরি জাস্টিস না করা হলেও নামকরন খুব একটা খারাপ হয়নি। বিলাল এবং মালিকের এরোটিক সেক্স দৃশ্যগুলো এক একটা পিস অফ আর্ট। যথেস্ট মার্জিত এবং রুচিশীল।

তিউনিশিয়ার লোকেশাগুলো আপনার মনকে প্রফুল্লতায় ভরে দিবে। মুভিটিতে মুসলিম ধর্মকে এবং এর আচার আচরণকে খুব সুন্দর এবং মার্জিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আর সারা'র অভিনয়ের ব্যাপারে কি বলবো, আমি তার অভিনয় পছন্দ করি "ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন দ্যা ওয়েস্ট এবং পিংক প্যানথার" থেকে। যদিও বার্ধক্য এখন তার শরীরে বাসা বেধেছে কিন্তু তার গ্ল্যামার এখনো তার পিছু ছাড়েনি। নতুন নতুন চেহারার পাশে নিজের এই অবস্থানকে সে যথেস্ট উজ্জ্ব্লতার সাথে এনরো করে নিয়েছে। মুভিটির সবকিছুই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হলেও আমার কেন যেন মালিক আর তার কাজিনের সেক্স দেখার ইচ্ছা প্রচন্ড পরিমানে মনের ভিতর ঘুরপাক খেতে থাকে। জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছে সেই ডায়ালগ- কাজিন- আমরা কিন্তু কাজিন মালিক- আজকের জন্য আমরা কাজিন না কাজিন- আজকের জন্য আমরা সত্যি সত্যি কাজিন।

Monday 3 March 2014

ফাঁদ

è   আমি আবারো বলব, এটা ঠিক নয় রেজোয়ান। এটা অন্যায়। এটা এক ধরণের ফাঁদ। আমি কিছুতেই এটাকে সমর্থন করিনা।
è   শুভ্র, আমি তোমাকে কিছু সমর্থন করতে বলি নাই। তুমি বন্ধু হয়েছ বলে আমার কোন কিছুতে বাঁধা দিতে পারো না। আমার জীবন আমার মত করে কাটাবো। ন্যায় অন্যায় আমি বুঝবো। তুমি প্লিজ এটা নিয়ে কথা বলো না।
è  তাই বলে অন্যের জীবন নষ্ট করে দেবে?
è   আমি কারোর জীবনই নষ্ট করছি না শুভ্র।
è   করছো। করছো।
è  কিভাবে?
è   এই যে তোমার পছন্দ কিশোর ছেলে্গুলোকে। যারা তোমার হাতেই প্রথম সমকামি জগতে প্রবেশ করছে।
è   বাদ দাও।
è   রেজোয়ান, আমরা সবাই কিন্তু আমাদের এলাকার পরিচিত কোন বড় ভাই, চাচা অথবা নিজেরই কোন আত্মীয়ের হাতে এই জগতের সন্ধান পেয়েছি। কোন এক অসচেতন রাতে তাদের কামনার শিকার হয়েছি। অনেকেই এই জীবন থেকে বেরিয়ে গেছে। অনেকেই রয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের এই দৈহিক, আত্মিক কষ্টগুলো তো অন্ততপক্ষে আমাদের বোঝা উচিত। আমরাই কেন অন্যের কষ্টের কারণ হবো।
è   শুভ্র, তোমার এই লেকচারগুলো অন্য কোন ভালো মানুষের জন্য খরচ করো। তুমি হয়তো মন সর্বস্ব মানুষ। কামনার আগুন তোমাকে জ্বালায় না। কিন্তু আমি দেহস্বর্বস্ব মানুষ। কামনার আগুন আমাকে হিতাহিত জ্ঞানশুন্য করে দেয়। এখন যাও প্লিজ। আমার অন্য কাজ আছে।

আমি প্রতুত্তোরে কিছু বলতে যাবো এরই মধ্যে কলিংবেলে পাখির ডাক শোনা গেলো। রেজোয়ান দরজা খুলে দিলো। চৌদ্দ পনেরও বছরের এক কিশোর দাঁড়িয়ে দরজায়। হালকা গোঁফের রেখা পাতলা ঠোঁটের উপর।
-       ভাইয়া কি ব্যস্ত?
-        আরে নাহ। আসো। আমি তোমার অপেক্ষায় ছিলাম।
-       আমি মনে হয় একটু আগে চলে এসেছি।
-        তাতে এমন কোন ক্ষতি হয় নাই।
-        আমি অনেক গুলো নতুন মুক্তি পাওয়া ম্যুভি নিয়ে এসেছি। হলিউড বলিউড সব আছে। কোনটা দেখবে?

ছেলেটা কিছুক্ষন ভাবল। হয়তো সদ্য মুক্তি পাওয়া চলচিত্রের নাম মনে করার চেষ্টা করছে। আমি বসে তাদের লক্ষ্য করলাম। আমার সঙ্গে ছেলেটাকে রেজোয়ান পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলো না । তার মানে আমি উঠে গেলেই খুশী হবে রেজোয়ান। আমি উঠে পড়লাম।  রেজোয়ান জিজ্ঞেস করলো,
-       আবার কবে আসছো ?
-       দেখি।


তিনতলার সিঁড়ি দিয়ে আমি নেমে যাচ্ছি। রেজোয়ানের ঘরে এখন কি ঘটবে তাও আমার জানা। রেজোয়ানের কাছেই আমি শুনেছি কিভাবে সে কিশোর ছেলেগুলোকে সিডিউস করে। আজ আসার পরেই সে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলে দোস্ত, আজ একটা ফ্রেশ মাল খামু। রেজোয়ানের সাথে পরিচয় অনেক দিনের। তাই তার এ ধরণের কথা বার্তার সাথে আমি পরিচিত। আমি ভাবলাম, অনলাইনে নতুন কারো সাথে পরিচয় হয়েছে। আর অনলাইনে বটম গুলো থাকে চির ভার্জিন। তারা হাজার বার সেক্স করার পরেও নিজেদেরকে ভার্জিন বলে দাবি করে। এমন অনেককেই দেখেছি যারা রেজোয়ানের বাসা থেকে গেছে। তার মানে অন্ততপক্ষে দুই ডোজ নিয়ে গেছে তারাও নিজেকে পরে আমারই সাথে চ্যাটিং এ ভার্জিন বলে দাবি করে। প্রথম প্রথম এই ধরণের চরিত্রগুলোর উপর খুব বিরক্ত হতাম। এখন আর হই না। সহ্য হয়ে গেছে। আশপাশে এখন হিপোক্রিট মানুষের সংখ্যাই বেশী। যাদের ভিতরে এক বাহিরে আরেক। সেই হিসেবেও আমিও হিপোক্রিট। কারণ ব্যক্তি জীবনে আমি স্ট্রেইটের মুখোস পরে থাকি।

কিশোর ছেলেটির নাম তন্ময়। ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছে। পার্কে রেজোয়ানের সাথে পরিচয় সপ্তাহ দুয়েক আগে। রেজোয়ান জিমে যায় নিয়মিত। তারপরও সে সপ্তাহে অন্তত দুইদিন পার্কে যায় ব্যায়াম করতে। মূলত এটা থাকে তন্ময়দের মত ছেলেদের ফাঁদে ফেলার অভিযান। আমি নিজেও জানি না, বার বার যে এটাকে ফাঁদ বলছি সেটা ঠিক হচ্ছে কিনা। সমাজ আমাদের উপর এক অঘোষিত আইনের মাধ্যমে যৌন জীবন থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। আমরা যা চাই তা সমাজের সামনে হাত বাড়িয়ে নিতে পারিনা। একশো একটা দোররার বাড়ি এসে পড়ে সেই হাতের উপর। মোজেস (মুসা আঃ) , ইয়াসুয়া ( হিব্রু ইয়াসুয়া কে আরবিতে ইসা এবং ইংরেজীতে জেসাস লেখা হয়), মহানবী মুহাম্মাদ সঃ, গৌতম বুদ্ধ সবাই মানুষকে ভালোবাসতে উদ্দ্বুদ্ধ করে গেছেন। তারা শুধু প্রতিবেশীকে নয় নিজের শত্রুকে ভালোবাসতে বলে গেছেন।  আমরা আমাদের প্রতিবেশীর কোন শত্রু নেই। অথচ আমাদের যৌন আকাঙ্ক্ষার কথা জানার পর আমাদের পরিবার-পরিজন, প্রতিবেশী সবাই ঘৃণা করে। মহামানবদের ভালোবাসার অমোঘ বাণী তখন তাদের হৃদয়ে রেখাপাত করে না। তাই তো রেজোয়ানদের মত অনেককেই বেছে নিতে হয় ফাঁদ।

রেজোয়ানের শারীরিক গঠন খুবই আকর্ষনীয়। অন্যেরা তাই সহজে আকৃষ্ট হয়। তন্ময়ের হাত ধরে নিয়ে সে তার কম্পিউটারের সামনে বসিয়ে দেয়। নিজের গায়ের টি শার্ট খুলতে খুলতে বলে , দেখো ডি ড্রাইভে প্রচুর ম্যুভি আছে। বাংলা হিন্দী ইংরেজী আলাদা করে রাখা আছে। আর পর্ন ম্যুভি দেখতে চাইলে ই- ড্রাইভে আছে। দেখতে চাইলে দেখতে পারো।  আমি এই ফাঁকে দ্রুত একটা গোছল দিয়ে আসি।  তারপর দুজনে বসে ঋত্বিকের নতুন ম্যুভিটা দেখবো। কেমন!

রেজোয়ান গোছল করতে যায়। সে গুড় মাখিয়ে গেছে। এবার পিঁপড়া আসবেই। রেজোয়ান সরতেই তন্ময় কিন্তু ডি –ড্রাইভে যায় না। তার গন্তব্য ই-ড্রাইভে। ফোল্ডার ভরা পর্ণ। তন্ময়ের মনে হতে থাকে সে স্বর্গের চাবি হাতে পেয়েছে। এই বয়সে ব্লু ফিল্মের সন্ধান পাওয়া অনেক কষ্টের। সে একটার পর একটা খুলে দেখতে থাকে। কিছুটা দেখেই আরেকটা চালু করে। তার বুকের ভেতরে ধুকপুকুনিটা বেড়ে গেছে। শরীরের বিশেষ জায়গাটা ফুলে গেছে। মনে হচ্ছে কাপড় ফেঁড়ে বেরিয়ে আসবে। ফাইলগুলোর উপরে গে ফোল্ডার বলে একটা ফোল্ডার। সে সেখানে ঢুকে দেখে সুদর্শন পুরুষেরা একে অন্যের সাথে রতিক্রিয়ায় মত্ত। তাদের শারীরিক গঠন দেখে তার মাথায় কিছুক্ষন আগে দেখা রেজোয়ানের “গুড ফিজিক” বিদ্যুৎ চমকের মত ভেসে এলো। সে রেজোয়ানের বাথরুমের দরজার দিকে আড়চোখে একবার তাকিয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে  নিলো। কম্পিউটারের পর্দায় সুদর্শন দুই শেতাঙ্গ পুরুষের কাম লীলা।  চুম্বনের পর তারা এখন কাপড় খুলতে শুরু করেছে। 

---------------------------------------------------------------------------------------------
গল্পটি প্রথমে ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। ফেসবুকে পাঠক মন্তব্যের কিছু অংশঃ
---------------------------------------------------------------------------------------------

ফলাফল শূন্য
তুমি হয়তো মন সর্বস্ব মানুষ। কামনার আগুন তোমাকে জ্বালায় না। কিন্তু আমি দেহস্বর্বস্ব মানুষ। কামনার আগুন আমাকে হিতাহিত জ্ঞানশুন্য করে দেয়।

Prince Raihan
Tomar lekhar hat khubi valo. Pore ki holo??? ‪#‎Anupom‬

ফলাফল শূন্য
তারপর কি হয়েছে, অনুপম বলবে কিভাবে? ....ও তো চলে এসেছে। @প্রিন্স +মন মাঝি

Mon Majhi Ctg
ohh tai to..2mi nischoy chile tai na...@result 0

ফলাফল শূন্য
হুম, আমি অনুপমের সাথে ছিলাম। যখন রেজোয়ানের রুমে ছেলেটা ঢুকল আমরা দুজন বের হয়ে গেছি@মন

রাকিব হাসান
Valo laglo .. Shundor hoise

tai????

Mon Majhi Ctg
story ta kin2 heavy ..pore hot hoye gechi..

ফলাফল শূন্য
গল্পে সূক্ষ্ম ভাবে কিছু সত্য ফুটে ওঠেছে যা সবার লেখায় আসেনা। ......অনুপম অনেক অনেক থ্যান্কু

Fahem Ahammed
ar koi ? Ses halo nato .

Anu Pom
শেষ হয়েও হইলো না শেষ হচ্ছে ছোট গল্পের বৈশিষ্ট্য। আর এর পরের অংশের বর্ননা দিলে তো চটি গল্প হয়ে যাবে ভাই ফাহিম।

নাস্তিকঃ প্রথম পর্ব

(প্রেম মৃত্যুকে দেয় মহিমা, জীবনকে দেয় গৌরব, আর প্রবঞ্চিতকে দেয় কি? প্রবঞ্চিতকে দেয় দাহ, যে আগুন আলো জ্বালে না, অথচ দহন করে। সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দাহনে পলে পলে দগ্ধ হল কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার। - এইটি যাযাবরের ‘দৃষ্টিপাত’ উপন্যাসের একটি বিশেষ লাইন। এই লাইনটি আমার গল্পের নায়ক ঋত্বিকের সাথে অনেক মিলে গেছে –তাই উল্লেখ করলাম।)

নাস্তিক। এই শব্দটা অনেকের কাছে খুব আপত্তিকর। আশে পাশের কেউ নাস্তিক শুনলেই আমরা অনেকেই নাক সিটকাই, ভাবি – এ হল সকল আদি পাপের আঁধার। তাই নাস্তিকদের আমরা ঘৃণার চোখে দেখি। কিন্তু এ কথাটা যে ভুল তা রবীন্দ্রনাথ তার ‘চার অধ্যায়’ গল্পে জ্যাঠামশায় ও ভাইপো সতিশ চরিত্র দিয়ে বুঝিয়েছেন। তাঁদের আদর্শ ছিল আমরা নীতিবিরুদ্ধ কোনও কাজ করবো না পাছে লোকজন আমাদের নাস্তিকতা ধর্মটাকে গালি দেয়।জ্যাঠামশায় আরও বলতেন, আস্তিকরা যত খুশি নীতিহীন কাজ করুক না কেন, আমরা বিবেকের বাইরে কিছু করবনা।

বন্ধুরা, আপনাদের এখন যেই গল্পটি বলব তা আমার এক নাস্তিক বন্ধুর। তার নাম ঋত্বিক। আমার দেখা পৃথিবীর একজন খাঁটি মানুষ। উপরের যে জ্যাঠা মশায়ের কথা বললাম, সে তার অনুসারী। তার প্রথম ধর্ম, কাউকে কোনও কথা দিলে তা জীবন দিয়ে হলেও রাখতে হবে।তারপর ন্যায়-অন্যায়ের স্পষ্ট সীমারেখা দিয়ে চালিত ঋত্বিক খুবই বিবেকবান ও বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ। এরকম আরও কত কি? তার গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তার এত গুণের জন্য আমাদের সকল বন্ধু তাকে ভীষণ ভালোবাসে। তাই নাস্তিক জেনেও আমরা তাকে মাথায় করে রেখেছি।আমরা বলি, এটা তোর ব্যক্তিগত ব্যপার। তবু কিছু বন্ধু তার দারা এমন ভাবে প্রভাবিত হয়েছে যে তাকে গুরু মেনে নাস্তিকতায় দীক্ষা নিয়েছে।বলে রাখা ভাল, ঋত্বিকের সকলের সাথে মিশলেও আমাকে শুধু তার মনের গোপন কথাগুলো বলত। যদিও আমি আস্তিক, তবুও আমার উপর ছিল তার রাজ্যের বিশ্বাস। সদা হাসিখুশি, প্রাণচঞ্চল, অত্যন্ত রোমান্টিক, মিশুক ছেলেটি যে ভিতরে ভিতরে ভীষণ একা তা কেবল আমি জানতাম, পৃথিবীর আর কেউ তা জানত না।

আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়ছি। সামনে মাস্টার্স পরীক্ষা।পড়ার ভীষণ চাপ। এর মধ্যে আমার প্রেমিকা মৌ–এর সাথেও প্রতিদিন দেখা করতে হয়। তবু রাতে হলে ফিরে ওর সাথে ঘাটে বসে আলাপ করতে হয়। সকল বন্ধুরা চলে যাবার পরও ও আমাকে আরও ঘণ্টা খানেক বসিয়ে ওর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বলত, আমিও আমার কথা বলতাম। বেশ কিছুদিন ওর সাথে তেমন কথা হয় না। বলেছিল, ওর মামা কানাডা গেছে, তাই মামী ও মামাতো ভাইবোনের জন্য মামার বাসায় থাকছে। গতকাল ওকে হল গেটে পেয়ে ভীষণ খুশি হলাম, কিন্তু ওর গম্ভীর মুখ আমার হৃদয়কে নাড়িয়ে দিল। প্রশ্ন করলাম, বিষয়টা কি? সে যে বিষয়টা আমাকে বলল তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। যাকে আমি কোনদিন হতাশ হতে দেখিনি, তাকে মনে হল যন্ত্রণা ওকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে।ওকে নিয়ে শহিদুল্লাহ হলের পুকুর ঘাটে এসে বসলাম। ও ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না কীভাবে কথাটা বলবে। আমি বার বার অভয় দেয়ার পর, সে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো। সে যা বলল তা অনেকটা এরকম।

গত কিছুদিন ধরে অর্ক নামে একজন ৩০ ঊর্ধ্ব লোকের সাথে আমার ফেসবুকে ও মোবাইলে কথা হচ্ছিল।কথা বলতে বলতে আমার মনে হচ্ছিল আমি লোকটির প্রেমে পড়ে গেছি। এমন একটা ঘোরের জগতে আমাকে নিয়ে গিয়েছিলো, আমি রীতিমত মোহগ্রস্ত ছিলাম।

যেহেতু আমি জানতাম সে সমপ্রেমি, তাই আমি আঁতকে উঠিনি। বলে রাখা ভাল, আমি আস্তিক হলেও অনেকটা যুক্তিবাদী, দুনিয়াদারির খবর রাখি।আমি জানতাম, ছেলে-মেয়ে যেমন প্রেম হয়, তেমনি মেয়ে-মেয়ে বা ছেলে-ছেলেও প্রেম হতে পারে। তাকে আরও উৎসাহ জাগিয়ে বিষয়টা খুলে বলতে বললাম।


সে বলল,তুই তো জানিস আমি কোনও মেয়েকে কোনদিন ভালবাসতে পারবোনা। নাস্তিক হয়েছিলাম ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে নয়, মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে। অভি যেদিন আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো, তখন থেকে আমি আর কারো সাথে কোনও সম্পর্ক করিনি। তোদের সবাইকে নিয়ে আনন্দ–ফুর্তিতে দিন কাটাচ্ছিলাম।

বললাম, এখন কি হল তাই বল, খুলে বল?
-আমি যেদিন অর্কের সাথে দেখা করতে ওর বাসায় যাই, সে আমাকে পাগলের মতো আদর করেছিল। সারারাত এত কথা ও এত গল্প করেছিলাম যে, আমার মনে হল, আমি সব পেয়ে গেছি। আমি যাকে খুঁজছি এই সেই।আমার প্রতিজ্ঞা ভেঙে আমি মনে মনে আস্তিক হয়ে গেছিলাম।শুরু হল আমাদের আনন্দ-যাত্রা। প্রতিদিন তার বাসায় যাওয়া। সে আমাকে চুম্বকের মতো টানতে লাগলো। বিকেলে অফিস থেকে ফেরার পথে সে আমাকে গাড়ীতে করে বাসায় নিয়ে যেত। অন্য রকম সুখ সাগরে আমি ভাসতে লাগলাম। সে আমাকে অনেক আদর করে খাওয়াই দিত,স্নান করিয়ে দিত। আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত এমনভাবে সে চেটে দিত মনে হতো আমার মতো এমন সৌভাগ্যবান পৃথিবীতে আর কেউ নেই। সে পাগলের মতো আমায় চুম্বনে চুম্বনে সিক্ত করত। এর মধ্যে সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমিতো আনন্দে আত্মহারা। মনে মনে ওকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করি। আমাকে নিয়ে থাইল্যান্ডের পাতাইয়াতে মধুচন্দ্রিমাও করে আসে। এখানে একটা কথা বলা হয়নি, ওর অন্য এক বয়ফ্রেন্ড ছিল যে চট্টগ্রামে থাকতো। সে ফ্রেন্ডের কথা আমাকে যখন জানালো, আমার মনে হল,থাক না, আমি যা চাই তাতো পাচ্ছি, ওর ফ্রেন্ড নিয়ে মাথা ঘামিয়ে আমি আমার সুখের সংসার ভাঙবো কেন? আমার সামনে সে ওই ফ্রেন্ডের সাথে বিভিন্ন কথা বলত, আমি কিছুই মনে করতাম না।

এভাবে চললে কি ক্ষতি হতো? হঠাৎ সেদিন সে জানালো যে, তার ওই বয়ফ্রেন্ড একবারেই ঢাকা চলে আসছে।তাকে সে কষ্ট দিতে পারবে না। কারণ তাঁদের দীর্ঘ ২ বছরের সম্পর্ক। আমি যেন সরে যাই তার জীবন থেকে –এই অনুরোধ। আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। আমি এখন কি করবো? অর্কের কথায় সামান্য একটু অনুশোচনা ছিল মাত্র। তাও মনে হল অভিনয়।তার আবার প্রচণ্ড ধর্মবিশ্বাস। আমার মাথা কেবলই ঘুরতে লাগলো। একবার মনে হল, সে হয়তো আমাকে পরীক্ষা করছে। কিন্তু না, আমি ভুল। কারণ সে আমাকে তার বাসায় যেতে সম্পূর্ণ নিষেধ করে দিয়েছে, এমনকি ওর সাথে কোনও ধরনের যোগাযোগ করতেও বারণ করেছে।তার বন্ধুটি এখন বাসায়।

এখানে আমার কি অপরাধ? আমি তার কি ক্ষতি করেছিলাম।কেন আমাকে নিয়ে এই নিষ্ঠুর খেলা খেলল? কেন সে আমার সাথে এমন করলো? আমিতো নিজের মনে নিজের কর্মকাণ্ড নিয়ে বন্ধু বান্ধবসহ ভালোই দিন পার করছিলাম। অভির প্রসঙ্গ তুলে তাকে মাঝে মাঝে আমি মান্না দের ওই গানটা শোনাতাম, ও তখন হাসত, বলত – আমি তোমাকে নিয়ে কখনও খেলবো না।
‘যে ক্ষতি আমি নিয়েছিলাম মেনে
সেই ক্ষতি পূরণ করতে কেন এলে
কি খেলা তুমি খেলে যাবে নতুন করে’

ঋত্বিককে আমি কি সান্ত্বনা দিব? আমার যেন ভাষা নেই। আমার ইচ্ছে করছিল, ওই অর্ককে খুন করতে।মনে মনে গালি দিয়ে বলছি, তোর মজা নেয়ার যদি জায়গা না থাকে, তুমি অন্য সমকামী ছেলেদের ব্যবহার করতি। এমন একটি ভাল মনের মানুষকে কষ্ট দেয়ার কি দরকার ছিল? (চলবে)

(বিঃদ্রঃ পাঠকের জন্য প্রশ্নঃ পরের পর্বে অর্ক কি ফিরে আসবে ঋত্বিকের ভালোবাসার কাছে? নাকি ঋত্বিক আবার নাস্তিক হয়ে যাবে? নাকি অর্কের প্রতি প্রতিশোধ নিবে? বা কি করলে ভাল হবে?)

----------------------------------------------------------------------------------------------------
গল্পটি প্রথমে ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। ফেসবুকে পাঠক মন্তব্যের কিছু অংশঃ
----------------------------------------------------------------------------------------------------

Jeet Roy
prothomoto,emon karor sathe prem kora uchit naa jar allready ekjon premik ache

Jeet Roy
he is just a proxy nothing else

Shopnomoy Ekdin
nastikotar ekebarei nijosso songa baniye ....khub oprasongik vabe golpo ta lekha hoyeche...BGG page e eto eto valo golpo porechi j ....ei golpo ta valo lageni...even emotion keo touch koreni ...amr

Pallab Sil
অর্কর প্রতি অবশ্যই প্রতিশোধ নেওয়া উচিত।কারন সে স্বার্থ পর কামুক তাই ঋত্বিক এর মতন একজন সরল সবুজ সমপ্রেমি মানুষের হৃদয় নিয়ে খেলেছে।

হারানো হিয়ার নিকুন্জ্ঞ পথে
golpotite arker 2nd bf arkoke chere chole jete pare.tokhon arker abar rittik ke pauwar akankha jabe.tokhon rittik r arker sathe kono prokar somporko rakhbena.erpor rittik bujte parbe bidhata akdin na akdin onnayer sasti dan.aivabe se astik hoye jabe.

Parihan Pari
emon khankir polar fira na ashai valo sorry for the gali

নাস্তিকঃ পর্ব-২ (শেষ)

মানুষ যা ভাবে, অনেক ক্ষেত্রে তার উল্টাটাই ঘটে, আবার মাঝে মাঝে তাও ঘটে যাঁদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন। আমি ঋত্বিককে বুঝাতে লাগলাম বিভিন্ন দৃষ্টান্ত দিয়ে। অবশেষে বললাম, অর্ক আসলে একটা বোকা। এমন হীরের টুকরো কেউ পায়ে ঠেলে। তোকে পাওয়া যেকোনো সমপ্রেমি মানুষের জন্য পরম ভাগ্যের। ও মনে হয় তোকে ভালোবাসতো না? 
-ভালো না বাসলে এভাবে অনুভূতি প্রকাশ করা যায় না। আমি যুক্তি দিয়ে চলি, আমার সকল যুক্তি প্রমাণ করেছিল ও আমাকে ভালোবাসে।
–তার পরম দুর্ভাগ্য। সে এমন একজনকে হারাল যে তাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতো। আর তুই এদিক থেকে সৌভাগ্যবান তুই এমন একজনকে হারালি যে তোকে ভালবাসেনি, শুধু তোর সুন্দর দেহটা নিয়ে খেলেছে। তুই বেঁচে গেলি রে !
-তোর এই কথাটা ভীষণ ভালো লাগলো।সত্যি ও জানলো না যে সে কি হারাল। 

এবার ওর মুখে একটু হাসি ফুটে উঠলো। দুজন কিছুক্ষণ হেসে ওকে কিছুটা সহজ করে দিলাম। বললাম, জীবন কেটে যাবে। কারো জন্য কারো কিছু থেমে থাকবে না। আমি জানি, শেষ হাসি তুই হাসবি। তোর আত্মবিশ্বাস নিয়ে তুই অটল থাক। অর্ক তোর ভালোবাসার কাছে ঠিকই ফিরে আসবে।তার সকল পথ যখন বন্ধ হয়ে যাবে,তখন তোর কাছে আসা ছাড়া ওর কোনও বিকল্প থাকবে না। খেলাটা তখন তুই খেলবি।
ঋত্বিক শুধু একটা কথাই বলল, তোর কথা যদি সত্যি হয়, তবে আমি পুরোপুরি আস্তিক হয়ে যাব, আর কোনদিন নাস্তিক্যবাদ প্রচার করবো না। 

ওইদিনের কথাবার্তা ওখানেই শেষ হয়। রুমে ফিরে ঋত্বিক আকাশ-পাতাল অনেক কিছু ভাবতে লাগলো। যদি এমন হয়, অর্কর বন্ধুটা অন্য কারো সাথে চলে গেছে, তখন অর্ক ঠিকই তার কাছেই ফিরে আসবে। সে মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, যাই ঘটুক না কেন, সে অর্কের জন্য অপেক্ষা করবে। অর্ক ছাড়া কারো কাছে গিয়ে সে শান্তি পাবে না। অর্কের প্রতি তার সীমাহীন নির্ভরতার অনেক যুক্তি আছে। একটা একটা যুক্তি সে বিশ্লেষণ করে দেখল। অর্ক হয়তো তাকে দেয়া কথা ভুলে যেতে পারে, কিন্তু সে ভুলবেনা। ভুলে যাওয়া মানে তার পরাজয়। সে কিছুতেই হারতে পারে না। প্রচণ্ড এক জিদ ভর করলো তার দেহ-মনে। জীবন নিয়ে খেলার সিদ্ধান্ত তখনি নিয়ে ফেললো সে। তারপরই ভাবল, অর্ককে একটি মেইল করলে কেমন হয়? যা ভাবা তা করা। মেইলে লিখতে লাগলো সে - 

প্রিয়,
তোমার বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তোমার প্রতি অভিমানও নেই, এমনকি তোমার কাছে চাওয়া-পাওয়াও নেই । শুধু এক বুক ভালোবাসা আছে। এই ভালোবাসা শত অপমানে, অসন্মানেও অটল। এই ভালোবাসায় কোনও নোংরামি বা অস্বচ্ছতা নেই। এই ভালোবাসা ভালোবাসার বিনিময়ে ভালবাসাও আশা করে না। শুধু তোমার কাছে থাকার, তোমার সকল প্রয়োজনে সাড়া দেবার, তোমাকে খুশি রাখার এক অনন্ত আকুলতা এ হৃদয়ের গভিরে প্রোথিত। 

আমি যতটুকু জানি, তুমি ভুল করে আমার কাছে চলে এসেছ। তোমার ভুলটাই আমার জীবনের চরম সত্য। আমার সত্য নিয়ে আমি সারা জীবন বেঁচে থাকতে পারবো। কারণ, এই সত্যের পেছনে আমি আজীবন ছুটেছি। যেহেতু সত্য আমার জীবনে আলো হয়ে এসেছে, এই আলোই আমার জীবন পথের প্রেরণা হয়ে আমাকে শান্তির পারাবারে নিয়ে যাবে। আমি অনন্ত শান্তির বারিধারা পান করার জন্য আমার জীবনের বাকি দিনগুলো পার করে দিতে পারবো।

দুজন পথিক কথা বলতে বলতে যাচ্ছে, তাঁদের কথা শুনল পাশে দিয়ে যাওয়া এক পথচারী। এই পথচারী ওই দুই ব্যক্তির একজনের একটা কথা হৃদয়ে নিয়ে জীবন পার করে দিল, আর যারা কথা বলছিল তারা তা হয়তো ওইসময়ই ভুলে গিয়েছিলো। আমি সেই পথচারী যে তোমার কথা আমৃত্যু মনে রাখবে। কারণ, আমাকে তুমি যা দিয়েছ, তা পৃথিবীর কোনও মানুষ আমাকে দিতে পারে নাই, পারবেও না। আমি তা চাইও না। জীবনের অনেক সময় কেটে গেলো তোমার দেখা পেতে পেতে, বাকিটা কেটে যাবে তোমার তপস্যা করতে করতে। তোমার ধ্যান ভাঙুক, অথবা না ভাঙুক – আমি আমার সাধনা চালিয়ে যাব। আমি জানি, সাধনায় সিদ্ধি লাভ হয়।

তুমি হয়তো ভাবতে পার আমি আবেগপ্রবণ। মোটেই কিন্তু তা নয়। আবেগ খুবই ক্ষণিকের এক অনুভূতি যার স্থায়িত্ব অল্প সময়। আমার জীবনের আগা–গোঁড়া মনের মানুষের ধ্যানে কেটেছে যা কোনওভাবে আবেগ নয়, এটা নিরন্তর বাস্তবতা। আর সেই মনের মানুষ হয়ে তুমিই এলে আমার জীবনে।তোমার সাথে কাটানো দিনগুলো আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন, সেই স্বপ্নের দিনগুলো বুকে নিয়ে আমার পক্ষে বাকি জীবন পার করে দেয়া সম্ভব।

আমার ভালোবাসা কি একতরফা ছিল? না, এটার ফুরসত তুমি আমাকে দাওনি। তোমার প্রবল জোয়ারে আমার দুকুল যখন একটু একটু করে ভাঙছিল, আমিতো সেই ভাঙনে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি। আমি চেয়েছিলাম আরও ভাঙতে। কিন্তু তুমি হঠাৎ জোয়ার বন্ধ করে দিলে। একি আমার অপরাধে, নাকি তোমার সকল অভিপ্রায় পূরণ হয়ে যাবার কারণে? এখানেও আমার কোনও অভিযোগ নেই। আমি তোমার বিরুদ্ধে কোনও জিঘাংসা পোষণ করি না, কৈফিয়তের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেও চাই না। কারণ, তোমার কোনও অপমান আমার নিজেরি অপমান। তোমাকে অশ্রদ্ধা করবো – এমন কথা আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি।

জান, প্রতি রাতের মতো কাল রাতেও তুমি আমার স্বপ্নে এসেছিলে। আমার স্বপ্নপুরুষ আমাকে নিয়ে কত রকমের খেলা খেলেছে, আমাকে সুখ সাগরে ভাসিয়েছে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি, এটা আমার স্বপ্ন। মানুষ দিনে যা ভাবে, তা নাকি রাতে ঘুমের মাঝে আসে। কে জানে? নিজেকে বেশি প্রশ্ন করতে আজকাল ভয় লাগে। চলে যাক না দিন!

তুমি হয়তো ভাবতে পার, আমি তোমার শরীরকে ভালবেসেছি। নিজেকে বারবার প্রশ্ন করেও আমি এর উত্তর পাই নি। শরীরের প্রতি আমার তেমন মোহ নেই, আমি শুধু তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে তোমার স্পর্শে অদ্ভুত ভাললাগায় কেঁপেছি, তোমার কঠিন আলিঙ্গনে চরমভাবে শিহরিত হয়েছি, তোমার সকল ইচ্ছেগুলোকে পূরণ করে দিয়েছি। কারণ তোমার ইচ্ছেকে না করবো, এতবড় দুঃসাহস আমার ছিল না। তুমি যখনি আমাকে বউ বলে ডেকেছ, আমার সমস্ত অন্তরাত্মা অন্যরকম এক ভাললাগার অনুভূতিতে ছেয়ে যেত।

এই দিনগুলো বুকে নিয়ে আমি বাঁচতে চাই।তুমি দূরে থাকো অথবা কাছে থাকো – আমার কাছে সবই সমান। আমি জানি, আমার সারা সকাল-দুপুর-বিকাল-সন্ধা-রাত, সকল বেলায় কেবল তোমারি উপস্থিতি। 

‘তুমি সুখ যদি নাহি পাও, যাও সুখেরও সন্ধানে যাও
আমি তোমারে পেয়েছি হৃদয়ও মাঝে , আরও কিছু নাহি চাই গো’

তোমার চিরদিনের সঙ্গী
ঋত্বিক 

মেইলটা পাঠিয়ে ক্লান্ত শরীরে সে ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমের মাঝে সে স্বপ্ন দেখল, অর্ক এসে ডাকছে, আলিঙ্গন করছে।বলছে, বউ, তোমাকে ছেড়ে আমি থাকতে পারছি না। তাই তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি। আমি তো কেবল তোমাকে পরীক্ষা করছিলাম। তুমি পাস করেছো। আমি শুধু তোমাকে ভালবাসি।চুম্বনে চুম্বনে সিক্ত করে তুলছে তার সমস্ত শরীর। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখল, তার সমস্ত শরীর ঘামে চুপচুপে। বিছানা ছেড়ে উঠে বাথরুমে গিয়ে চোখে মুখে জল দিয়ে একটু ফ্রেস হয়ে সে ছাদে গেলো। আকাশের তারাগুলোকে আজ খুব অসহায় মনে হচ্ছে। অথচ একদিন কত পরিপূর্ণই না ছিল এই আকাশ। অর্কের বুকে মাথা রেখে কত পূর্ণিমার রাত কত জায়গায় কাটিয়েছে। ভাবতেই চোখে জল এসে গেলো।

একরকম নিরানন্দেই কেটে যাচ্ছিল ঋত্বিকের দিন। চেষ্টা করছি ওকে সঙ্গ দেবার। কিন্তু মনমরা ভাবটা সে কোনোভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছিল না। এর মধ্যেই একদিন দেখি, সে খুব স্বাভাবিক। আবার আগের মতো হাসিখুশি,প্রাণচঞ্চল। কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলল – আজ সকালে অর্ক এসেছিল। সারাদিন একসাথে ঘুরেছি। বললাম, কীভাবে এটা হল?
সে বলল, তার ওই বন্ধুটা ভিতরে ভিতরে নাকি বহুগামি ছিল। সে যখন অফিসে থাকতো, তখন অন্য লোককে তার বাসায় নিয়ে আসতো। সেদিন কি কারণে সে খবর না দিয়ে বাসায় এসে দেখে, তার বন্ধুটি অন্য লোক নিয়ে ফুর্তি করছে।
ওই ঘটনা নাকি তার চোখ খুলে দিয়েছিলো। কয়েকদিন নিজের সাথে বোঝাপড়া করে অবশেষে আমার কাছেই ছুটে আসলো।
বললাম, তাহলে এখন থেকে তুই আর নাস্তিক নস?
সে বলল, অর্ক যতদিন আমার সাথে থাকবে ততদিন আস্তিক থাকবো।


-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
গল্পটি প্রথমে ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। ফেসবুকে পাঠক মন্তব্যের কিছু অংশঃ
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

আস্তিকতা আর নাস্তিকতা এখানে না টানলেই হত। তবে সমালোচনাটুকু লেখকের প্রতি সম্পুর্ন সম্মান প্রদর্শন জানিয়ে

Golper bishoy bostu te astikota-nastikotar k0no vumika-e to nei!!!

Sondor Ekta Mon Chai
Valobasha r Dormo k Bishesh kora na kora ki Ek ??

অল্প বিরাম
গল্প টা সুন্দর কিন্তু গল্পের মাঝে শেখার কিছু নেই । গল্পটা আমার কাছে খুবই সাধারন মনে হয়েছে।গল্পে বিশেষ কিছুই ছিলোনা

RealFriend Chai
valo laglona......

লেটার ডেস

যেনে নাও যখন আমি এই মুভির রিভিউ লিখছি তখন আমার দুচোখ বেয়ে অশ্রুধারা বইছে। আমি জানিনা এই মুভি সম্বন্ধে আমি কি লিখবো, কি লিখার আছে জীবনের নির্মম কাহীনি নিয়ে। আমরা সবাইতো জানি জীবন কতটা নির্মম, সামাজিক প্রথার বেড়াজালে। ভালোবাসা আসলেই অনেক সুন্দর একটা জিনিস।

যারা ভালোবাসাকে অবহেলা করছে বা বিভিন্ন মাপকাঠিতে মাপছে, এই মুভিটা শুধু তাদের জন্য। তাদেরকে জানানোর জন্য, যে তারা জীবন থেকে কি হারাচ্ছে? তারা জীবনের কাছ থেকে কি চায়? তারা কি সত্যি সত্যি একজন মানুষের কাছ থেকে, রূপ, যৌবন আর অর্থের বাইরে শুধুই ভালোবাসাকে চায় নাকি নিজের মনের গভীরে ভালোবাসা নামক শব্দের আড়ালে খোঁজে সৌন্দর্যের পাহাড়? 

আমি দেখেছি, সবাই তাই। কেউ যখন মুখে বলে ভালোবাসি তখন সে প্রথমেই খুঁজে সে দেখতে কেমন, তার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন, অর্থ আর প্রাচুর্য কেমন। তারপর সিদ্ধান্ত নেয় ইয়েস অর নো বলার। আমি এই পেইজের এডমিন হওয়ার বদৌলতে দেখেছি সত্যিকারের ভালোবাসা কিভাবে পদদলিত হয়। লিখে নাও আজকে সবাইকে একটা কথা বলি জীবন এবং মানবতার অভিজ্ঞতা থেকে। 

যারা কারো সত্যিকারের ভালোবাসাকে কাঁদিয়েছে, প্রকাশের সুযোগ দেয়নি, বিশ্বাস করেনি, ভালোবাসার আড়ালে শুধু লালন করেছে লালশাকে, তারা ঈশ্বরের কাছে তো ক্ষমা পাবেইনা, সুখি হবেনা পৃথিবীতেও। তুমি ভালোবাসা খুঁজছো? তাহলে যাকে ভালোলাগে তাকে জানাও তোমার ভালোবাসার কথা। ভয় পেওনা, সে মানা করে দিবে, দিকনা। দেখবে যে তোমাকে আজকে অবহেলা করেছে শুধু তোমার লুকস, অর্থ আর যৌবনের জন্য সে একদিন তার এই ভুলের জন্য অন্ধকারে একা একা কাঁদবে। 

এই কান্না শেয়ার করার জন্য সে তখন কোনো স্বন্তনা বা কারো কাঁধও পাবেনা। এটা শুধু কথার কথা না পরীক্ষীত সত্য।

যাই হোক এবার আসি মুভির কাহিনীর ব্যাপারে। যেই মুভি আমাকে পুরো ৫৫মিনিট অঝরে কাঁদিয়েছে।সেই মুভিকে নিজের ভাষায় লিখছি- 

ক্রিস্টিয়ান একজন সমকামী। একটি রেস্টুরেন্টে জব করে। রেস্টুরেন্টের কলিগদের সাথে তার অনেক সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। প্রতিদিন রাতে একজন নতুন দেহ সঙ্গী তার যৌন চাহিদার সাক্ষী। ভালোবাসা নামক স্বর্গীয় বস্তুর অভাব বা তার স্বাদ কোনটাই ক্রিস্টিয়ান কখনো পায়নি। ভালোবাসা তার কাছে দুটি দেহের ৫/১০ মিনিটের ঘর্মাক্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে কিছু শুভ্রলাভা উদগিরনই। 

এমনি সময়ে তার পাশের বাসায় চার মিশনারী বন্ধু শিফট করে, যারা ধর্ম প্রচারের কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। এদের মধ্যেই এ্যারন বেশ সুন্দর এবং ভদ্র। ক্রিস্টিয়ান এ্যারন কে দেখে তার প্রতি চরম আকর্ষণ অনুভব করে এবং তাদের সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য এক কেইস ড্রিংকস নিয়ে উপস্থিত হয়। গিয়ে জানতে পারে তারা কেউই ড্রিংকস করে না। খুব অপমানিত হয়ে ফিরে আসে সে।

অপরদিকে এ্যারন ও ক্রিস্টিয়ান এর প্রতি একটা অদ্ভুত আকর্ষণ ফিল করে। যদিও প্রতিদিন রাতে জানালার ফাক দিয়ে সে দেখে যে ক্রিস্টিয়ান নতুন নতুন পুরুষ নিয়ে আসছে নিজের যৌন চাহিদা চরিতার্থ করার জন্য। তারপরও কেন যেন তাকে ভালোলাগে তার। ধীরে ধীরে দুজন দুজনের সাথে কথাবার্তা বলতে বলতে একটা পর্যায়ে খুব কাছে চলে আসে। একটা দূর্বল মুহুর্তে যখন এ্যারন ক্রিস্টিয়ান এর খুব কাছে চলে যায় তখন এ্যারন ক্রিস্টিয়ান কে বলে যে সে এর আগে কারও সাথে এমন কিছু করেনি। 

ক্রিস্টিয়ান বলে কোন সমস্যা নাই এটা ঠিক হয়ে যাবে। ক্রিস্টিয়ান দুজন মানুষের মধ্যে সম্পর্ককে শুধু সেক্স দিয়ে বিচার করে এটা দেখে এ্যারন প্রচুর রিয়েক্ট করে। সে প্রচুর অপমানিত বোধ করে এবং ক্রিস্টিয়ানকে কে তার জীবনবোধ সম্পর্কে আয়না দেখায়। তার জীবনের শুধু সেক্সটাই প্রধান, ভালোবাসার কোন অনুভূতিই তার কাছে নাই। এমন মানুষের সাথে তার এই দুর্বল মুহুর্ত পর্যন্ত আসাই ভূল হয়েছে জানিয়ে এ্যারন সেই মুহুর্তেই ক্রিস্টিয়ানের রূম থেকে বের হয়ে যায়।

এরপর থেকে ক্রিস্টিয়ান বার বার ভালোবাসা সম্বন্ধে বুঝতে শিখেছে। আরও দূর্বল হয়েছে এ্যারন এর প্রতি। একদিন আবারও একটি দুর্বল মুহুর্তে দুজন দুজনকে প্রথমবারের মত কিস করে বসে যা মিশনারী বাকি ৩বন্ধু দেখে ফেলে। দেখে ফেলার পর তারা চার্চে ইনফর্ম করে এবং এ্যারন কে তার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। ক্রিস্টিয়ান নিজে নিজে খুব অনুশোচনায় ভোগে এই ভেবে যে তার জন্য এ্যারন এর ক্যারিয়ার এবং প্রেস্টিজ দুটোই ধ্বংস হয়ে গেল। 

সে ক্ষমা চাওয়ার জন্য এয়ারপোর্টে গিয়ে এ্যারন এর সাথে দেখা করে যেখানে ফ্লাইট øো ফলের কারনে ৫/৭ ঘন্টা লেট ছিলো। ক্রিস্টিয়ান বোঝাতে সক্ষম হয় যে সে এ্যারন কে কত ভালোবাসে। সেদিন এয়ারপোর্ট ইন এর তাদের শরীর প্রথমবারের মত বিবস্ত্র হয়। প্রথমবারের মত এ্যারন একটা পুরুষ শরীরের এতটা কাছে আসে। এ্যারন ভ্রমন করে না জানা এক অভিজ্ঞতার নতুন পৃথিবী। ভোরে এ্যারন তার ফ্লাইট নিয়ে নিজ বাড়ি চলে আসে যেখানে তার জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছিলো। 

তার বাবা মিশনারী প্রধান হওয়াতে সে খুবই লজ্জিত বোধ করে এমন ছেলের জনক হওয়াতে। সে তাকে মিশনারী এবং চার্চ থেকে ডিজওন করে। বাসায় এ্যারন প্রতিনিয়ত তার পরিবারের সদস্যদের কাছে অবহেলিত এবং অপমানিত হতে থাকে। অন্যদিকে ক্রিস্টিয়ান অনেক কষ্টে এ্যারন এর বাসার ফোন নাম্বার জোগাড় করে তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য। একটা সময় তাকে জানানো হয় যে এ্যারন মারা গেছে। কিন্তু এই মারা যাওয়ার ঘটনা যে পুরোটাই মিথ্যা তা ক্রিস্টিয়ান বুঝতে পারেনা। জীবনে প্রথম সাজানো তার ভালোবাসার ঘর মুহুর্তেই তছনছ হয়ে যায়। পরিবারের এই অপমানের গ্লানি এ্যারন নিতে না পেরে নিজেকে সংশোধনের জন্য কারেকশান হোমের বাসিন্দা করে। যেখানে শাস্তি হিসেবে প্রতিদিন তাকে ছোট্ট একটা টুথব্রাশ দিয়ে পুরো বিল্ডিংয়ের ফ্লোর পরিস্কার করতে হয়, নিজের পুরুষাঙ্গে ইলেক্ট্রিক শক নিতে হয়, বরফ ভর্তি বাথটাবে ঘন্টার পর ঘন্টা ডুবে থাকতে হয় আরও অমানুষিক অনেক কিছু।

এত কিছুর পরও কি এ্যারন পারবে সমাজের তথাকথিত সংশোধনী প্রকৃয়ায় সংশোধীত হয়ে সবাইকে গর্বিত করতে? পারবে কি তার জীবনের প্রথম ভালোবাসার মানুষটিকে ভূলে যেতে? ক্রিস্টিয়ান পারবে কি এর পর কাউকে নিজের দেহ সঙ্গী করতে, নাকি সারা জীবন কাটিয়ে দিবে অপূর্ণ ভালোবাসার স্মৃতি মন্থন করতে করতে? এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব পেতে চলুন দেখে ফেলি দ্যা মোস্ট রোমান্টিক ফিল্ম অফ মাই লাইফ “লেটার ডেস” । 

মুভিটি পরিচালনা করেছেন- সি.জে কক্স
প্রধান চরিত্রে আছেন- স্টিভ সেন্ডভস এবং ওয়েস রেমসি
মুভিটির ভাষা- ইংলিশ
মুভিটির দৈর্ঘ্য- ১০৭ মিনিট
মুক্তির সাল- ২০০৩
আই.এম.ডি.বি রেটিং- ৭.৩

অভিশপ্ত আমি

এক অভিশপ্ত জীবন নিয়ে পথে পথে ঠোকর খেয়ে বেরাচ্ছি গত তিনটা বছর। আমার এক বন্ধু বলেছিল আমি যে জীবনে পা বারিয়েছি সেটা কঠিন একটা পাপের রাস্তা। এখন কিছু না বুঝলেও খুব তাড়াতাড়িই আমি এর ফল পাবো। জানিনা সেদিন আমার ঐ বন্ধুটা আমাকে অভিশাপ করে কথাটা বলেছিল কিনা। আমি নিজেকে সেদিন থেকে বদলে নিতে শুরু করি এরপর নিজেকে চিরদিনের মতো এই পথ থেকে সরিয়ে নেবার ব্রতো করে সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেই। ভালোই চলছিলাম কয়েক বছর।

পড়ালেখা শেষ করে জব নিলাম একটা প্রাইভেট বাংকে। এই জবটাই আমার অতিতে নিয়ে গেল। মনের ঘরের যে যন্ত্রনা শিকল বেঁধে রেখেছিলাম। রবিনকে দেখে সেটা ফটাফট ছিরে গেল। রবিন হালকা পাতলা গড়ন। মধ্যম উচ্চতার শ্যাম বরণ ঘন কোকড়া চুলের প্রেম দেবতা। প্রথম দেখাতেই আমি কামনার আগুনে জ্বলে পুরে ছাই হতে লাগছিলাম। ওর কথার আর হাটার ভঙ্গিটা এতোটাই আকর্ষনীয় ছিল যে কোন সমকামীর পক্ষে সেটা দেখে কামনার আগুনে পুড়ে না উপায় আছে। আমি ওকে খুব সহজেই পেয়েছিলাম কেননা ও ছিল আমার ও জেনারেল ম্যানেজারের সহকারী। আমার প্রতিটা আদেশ ও এতোটা মনযোগ সহকারে করতো যে সেটা শুধু একজন ভালোবাসার মানুষই করে। আমি তার অবুঝ ভালোবাসা না বুঝেই তাকে আমার লালসার শিকার বানিয়ে ফেলি। একদিন রবিনকে একাকি পেয়ে জাপটে ধরি। হয়তো ও আমাকে ভালোবাসতো বলে ও চুপ করে থাকে। আমি ওর নিরবতাকে সম্মতি ভেবে মুহূর্তের মধ্যে আমার কাজ হাসিল করতে লিপ্ত হয়ে যাই।

যখন চরম মুহূর্তে দুজনেই পৌছে গেছি তখনই ধরা পড়ে যাই আমাদের ক্লাকের চোখে। নিজেদের কে সামলানোর আগেই সবার চোখেই পড়ে যাই। মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে যায়। কোথাকার আমি কোথায় চলে যাই সেই সময়টার কথা আর ভাষায় বর্ণনা করতে পারছি না। সেই যে মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসলাম এখন আমি কোথায় আছি সেটা বলতেও লজ্জা করে। রবিন কোথায় আছে সে বেঁচে আছে কিনা সেটাও জানা হয়নি। আমি আজ চারটা বছর কারো সাথে কোন যোগাযোগ করিনা। সেই ঘটনার পর থেকে আমি কতবার যে মরতে চেষ্টা করেছি সেটা আমারো হিসাব নেই। যতোবার মরতে গিয়েছি রবিনের নিশ্পাপ মুখ আমাকে মরতে দেয়নি। ওর কাছে ক্ষমা না চেয়ে আমি মরতে পারি না। হয়তো আমার পাপের ফল সে ভোগ করছে।

দুনিয়াতে আমার বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। মানুষের পাপের ঘড়া যখন পুর্ণ হয় তখনি এমন ঘটনা ঘটে। আমি পাপ করেছি বলেই আজ আমার এই অবস্থা। দুঃখের বিষয় এটাই যে আমার লালসার শিকার হয়ে একটা নিশ্পাপ মানুষের জীবন নষ্ট হয়ে গেল। এখন আমি যতোই অনুতপ্ত হইনা কেন যতোই সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাই সেদিনের সেই ঘটনাকে বদলানো সম্ভব নয়। সম্ভব নয় রবিন কে একটা সুন্দর জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার। কেন এই মিথ্যে ভাবনা ভাবছি? কোথায় আছে রবিন? সে কি বেঁচে আছে? বেঁচে থাকলে কি সে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে? আমি কি কোনদিন তার দেখা পাবো?

প্রিয় বন্ধুরা রবিনের পক্ষ হতে তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি জানি রবিন যতোদিন আমাকে ক্ষমা করে না দিবে ততোদিন আমিও স্বাভাবিক হতে পারবো না। যৌনতা মানুষকে মাদকের মতো আক্রান্ত করে কিন্তু আমি সৃষ্টির্কতার কাছে ক্ষমা চেয়েও আবারো সেই পথেই হেটেছি সেই কারনেই হয়তো আমার এতো বড় শাশ্তি পেয়েছি। কিন্তু আমার পাপের ভাগী অন্য কেউ পাবে এটাই আমার বড় শাশ্তি। তোমরা আমাকে দোয়া কর আমি যেন রবিনের কাছে ক্ষমা চেয়ে মরতে পারি। সবাই ভালো থেকো আর একটা অনুরোধ কেউ আমার মতো এমন যৌনতায় পা দিওনা যে অন্যের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
 
^ মাথায় ওঠ