blogger widgets

Monday 3 March 2014

ফাঁদ

è   আমি আবারো বলব, এটা ঠিক নয় রেজোয়ান। এটা অন্যায়। এটা এক ধরণের ফাঁদ। আমি কিছুতেই এটাকে সমর্থন করিনা।
è   শুভ্র, আমি তোমাকে কিছু সমর্থন করতে বলি নাই। তুমি বন্ধু হয়েছ বলে আমার কোন কিছুতে বাঁধা দিতে পারো না। আমার জীবন আমার মত করে কাটাবো। ন্যায় অন্যায় আমি বুঝবো। তুমি প্লিজ এটা নিয়ে কথা বলো না।
è  তাই বলে অন্যের জীবন নষ্ট করে দেবে?
è   আমি কারোর জীবনই নষ্ট করছি না শুভ্র।
è   করছো। করছো।
è  কিভাবে?
è   এই যে তোমার পছন্দ কিশোর ছেলে্গুলোকে। যারা তোমার হাতেই প্রথম সমকামি জগতে প্রবেশ করছে।
è   বাদ দাও।
è   রেজোয়ান, আমরা সবাই কিন্তু আমাদের এলাকার পরিচিত কোন বড় ভাই, চাচা অথবা নিজেরই কোন আত্মীয়ের হাতে এই জগতের সন্ধান পেয়েছি। কোন এক অসচেতন রাতে তাদের কামনার শিকার হয়েছি। অনেকেই এই জীবন থেকে বেরিয়ে গেছে। অনেকেই রয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের এই দৈহিক, আত্মিক কষ্টগুলো তো অন্ততপক্ষে আমাদের বোঝা উচিত। আমরাই কেন অন্যের কষ্টের কারণ হবো।
è   শুভ্র, তোমার এই লেকচারগুলো অন্য কোন ভালো মানুষের জন্য খরচ করো। তুমি হয়তো মন সর্বস্ব মানুষ। কামনার আগুন তোমাকে জ্বালায় না। কিন্তু আমি দেহস্বর্বস্ব মানুষ। কামনার আগুন আমাকে হিতাহিত জ্ঞানশুন্য করে দেয়। এখন যাও প্লিজ। আমার অন্য কাজ আছে।

আমি প্রতুত্তোরে কিছু বলতে যাবো এরই মধ্যে কলিংবেলে পাখির ডাক শোনা গেলো। রেজোয়ান দরজা খুলে দিলো। চৌদ্দ পনেরও বছরের এক কিশোর দাঁড়িয়ে দরজায়। হালকা গোঁফের রেখা পাতলা ঠোঁটের উপর।
-       ভাইয়া কি ব্যস্ত?
-        আরে নাহ। আসো। আমি তোমার অপেক্ষায় ছিলাম।
-       আমি মনে হয় একটু আগে চলে এসেছি।
-        তাতে এমন কোন ক্ষতি হয় নাই।
-        আমি অনেক গুলো নতুন মুক্তি পাওয়া ম্যুভি নিয়ে এসেছি। হলিউড বলিউড সব আছে। কোনটা দেখবে?

ছেলেটা কিছুক্ষন ভাবল। হয়তো সদ্য মুক্তি পাওয়া চলচিত্রের নাম মনে করার চেষ্টা করছে। আমি বসে তাদের লক্ষ্য করলাম। আমার সঙ্গে ছেলেটাকে রেজোয়ান পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলো না । তার মানে আমি উঠে গেলেই খুশী হবে রেজোয়ান। আমি উঠে পড়লাম।  রেজোয়ান জিজ্ঞেস করলো,
-       আবার কবে আসছো ?
-       দেখি।


তিনতলার সিঁড়ি দিয়ে আমি নেমে যাচ্ছি। রেজোয়ানের ঘরে এখন কি ঘটবে তাও আমার জানা। রেজোয়ানের কাছেই আমি শুনেছি কিভাবে সে কিশোর ছেলেগুলোকে সিডিউস করে। আজ আসার পরেই সে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলে দোস্ত, আজ একটা ফ্রেশ মাল খামু। রেজোয়ানের সাথে পরিচয় অনেক দিনের। তাই তার এ ধরণের কথা বার্তার সাথে আমি পরিচিত। আমি ভাবলাম, অনলাইনে নতুন কারো সাথে পরিচয় হয়েছে। আর অনলাইনে বটম গুলো থাকে চির ভার্জিন। তারা হাজার বার সেক্স করার পরেও নিজেদেরকে ভার্জিন বলে দাবি করে। এমন অনেককেই দেখেছি যারা রেজোয়ানের বাসা থেকে গেছে। তার মানে অন্ততপক্ষে দুই ডোজ নিয়ে গেছে তারাও নিজেকে পরে আমারই সাথে চ্যাটিং এ ভার্জিন বলে দাবি করে। প্রথম প্রথম এই ধরণের চরিত্রগুলোর উপর খুব বিরক্ত হতাম। এখন আর হই না। সহ্য হয়ে গেছে। আশপাশে এখন হিপোক্রিট মানুষের সংখ্যাই বেশী। যাদের ভিতরে এক বাহিরে আরেক। সেই হিসেবেও আমিও হিপোক্রিট। কারণ ব্যক্তি জীবনে আমি স্ট্রেইটের মুখোস পরে থাকি।

কিশোর ছেলেটির নাম তন্ময়। ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছে। পার্কে রেজোয়ানের সাথে পরিচয় সপ্তাহ দুয়েক আগে। রেজোয়ান জিমে যায় নিয়মিত। তারপরও সে সপ্তাহে অন্তত দুইদিন পার্কে যায় ব্যায়াম করতে। মূলত এটা থাকে তন্ময়দের মত ছেলেদের ফাঁদে ফেলার অভিযান। আমি নিজেও জানি না, বার বার যে এটাকে ফাঁদ বলছি সেটা ঠিক হচ্ছে কিনা। সমাজ আমাদের উপর এক অঘোষিত আইনের মাধ্যমে যৌন জীবন থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। আমরা যা চাই তা সমাজের সামনে হাত বাড়িয়ে নিতে পারিনা। একশো একটা দোররার বাড়ি এসে পড়ে সেই হাতের উপর। মোজেস (মুসা আঃ) , ইয়াসুয়া ( হিব্রু ইয়াসুয়া কে আরবিতে ইসা এবং ইংরেজীতে জেসাস লেখা হয়), মহানবী মুহাম্মাদ সঃ, গৌতম বুদ্ধ সবাই মানুষকে ভালোবাসতে উদ্দ্বুদ্ধ করে গেছেন। তারা শুধু প্রতিবেশীকে নয় নিজের শত্রুকে ভালোবাসতে বলে গেছেন।  আমরা আমাদের প্রতিবেশীর কোন শত্রু নেই। অথচ আমাদের যৌন আকাঙ্ক্ষার কথা জানার পর আমাদের পরিবার-পরিজন, প্রতিবেশী সবাই ঘৃণা করে। মহামানবদের ভালোবাসার অমোঘ বাণী তখন তাদের হৃদয়ে রেখাপাত করে না। তাই তো রেজোয়ানদের মত অনেককেই বেছে নিতে হয় ফাঁদ।

রেজোয়ানের শারীরিক গঠন খুবই আকর্ষনীয়। অন্যেরা তাই সহজে আকৃষ্ট হয়। তন্ময়ের হাত ধরে নিয়ে সে তার কম্পিউটারের সামনে বসিয়ে দেয়। নিজের গায়ের টি শার্ট খুলতে খুলতে বলে , দেখো ডি ড্রাইভে প্রচুর ম্যুভি আছে। বাংলা হিন্দী ইংরেজী আলাদা করে রাখা আছে। আর পর্ন ম্যুভি দেখতে চাইলে ই- ড্রাইভে আছে। দেখতে চাইলে দেখতে পারো।  আমি এই ফাঁকে দ্রুত একটা গোছল দিয়ে আসি।  তারপর দুজনে বসে ঋত্বিকের নতুন ম্যুভিটা দেখবো। কেমন!

রেজোয়ান গোছল করতে যায়। সে গুড় মাখিয়ে গেছে। এবার পিঁপড়া আসবেই। রেজোয়ান সরতেই তন্ময় কিন্তু ডি –ড্রাইভে যায় না। তার গন্তব্য ই-ড্রাইভে। ফোল্ডার ভরা পর্ণ। তন্ময়ের মনে হতে থাকে সে স্বর্গের চাবি হাতে পেয়েছে। এই বয়সে ব্লু ফিল্মের সন্ধান পাওয়া অনেক কষ্টের। সে একটার পর একটা খুলে দেখতে থাকে। কিছুটা দেখেই আরেকটা চালু করে। তার বুকের ভেতরে ধুকপুকুনিটা বেড়ে গেছে। শরীরের বিশেষ জায়গাটা ফুলে গেছে। মনে হচ্ছে কাপড় ফেঁড়ে বেরিয়ে আসবে। ফাইলগুলোর উপরে গে ফোল্ডার বলে একটা ফোল্ডার। সে সেখানে ঢুকে দেখে সুদর্শন পুরুষেরা একে অন্যের সাথে রতিক্রিয়ায় মত্ত। তাদের শারীরিক গঠন দেখে তার মাথায় কিছুক্ষন আগে দেখা রেজোয়ানের “গুড ফিজিক” বিদ্যুৎ চমকের মত ভেসে এলো। সে রেজোয়ানের বাথরুমের দরজার দিকে আড়চোখে একবার তাকিয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে  নিলো। কম্পিউটারের পর্দায় সুদর্শন দুই শেতাঙ্গ পুরুষের কাম লীলা।  চুম্বনের পর তারা এখন কাপড় খুলতে শুরু করেছে। 

---------------------------------------------------------------------------------------------
গল্পটি প্রথমে ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। ফেসবুকে পাঠক মন্তব্যের কিছু অংশঃ
---------------------------------------------------------------------------------------------

ফলাফল শূন্য
তুমি হয়তো মন সর্বস্ব মানুষ। কামনার আগুন তোমাকে জ্বালায় না। কিন্তু আমি দেহস্বর্বস্ব মানুষ। কামনার আগুন আমাকে হিতাহিত জ্ঞানশুন্য করে দেয়।

Prince Raihan
Tomar lekhar hat khubi valo. Pore ki holo??? ‪#‎Anupom‬

ফলাফল শূন্য
তারপর কি হয়েছে, অনুপম বলবে কিভাবে? ....ও তো চলে এসেছে। @প্রিন্স +মন মাঝি

Mon Majhi Ctg
ohh tai to..2mi nischoy chile tai na...@result 0

ফলাফল শূন্য
হুম, আমি অনুপমের সাথে ছিলাম। যখন রেজোয়ানের রুমে ছেলেটা ঢুকল আমরা দুজন বের হয়ে গেছি@মন

রাকিব হাসান
Valo laglo .. Shundor hoise

tai????

Mon Majhi Ctg
story ta kin2 heavy ..pore hot hoye gechi..

ফলাফল শূন্য
গল্পে সূক্ষ্ম ভাবে কিছু সত্য ফুটে ওঠেছে যা সবার লেখায় আসেনা। ......অনুপম অনেক অনেক থ্যান্কু

Fahem Ahammed
ar koi ? Ses halo nato .

Anu Pom
শেষ হয়েও হইলো না শেষ হচ্ছে ছোট গল্পের বৈশিষ্ট্য। আর এর পরের অংশের বর্ননা দিলে তো চটি গল্প হয়ে যাবে ভাই ফাহিম।

রিলেটেড পোস্ট :



0 comments:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

 
^ মাথায় ওঠ